আল জাজিরা রিপোর্ট: আওয়ামী লীগে গভীর বিভক্তি, হাসিনার শাসনামল প্রশ্নবিদ্ধ
আওয়ামী লীগ এবং দলের নেত্রী শেখ হাসিনা এখন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পর, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের এক যুগের অবসান হয়েছে। রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের ঘটনা থেকে শুরু করে গণ-অভ্যুত্থান, এগুলোর মধ্য দিয়ে দলের অভ্যন্তরে এক গভীর বিভক্তি স্পষ্ট হয়েছে। দলের নেতাকর্মীরা এখন প্রশ্ন করছেন, কোথায় ভুল হয়েছে এবং ভবিষ্যতের জন্য কী করা উচিত।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি এবং হতাশা বেড়েছে, বিশেষ করে শেখ হাসিনার সরকারের দমন-পীড়ন এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে। খোলামেলা আলোচনা থেকে তারা মনে করেন, এই সংকট থেকে বের হয়ে আসার একমাত্র উপায় হবে স্বীকারোক্তি এবং দুঃখ প্রকাশ। তবে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করতে প্রস্তুত নয়। বিশেষত, তারা এখনও জনগণের সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়ে নিজেদের উপর্যুপরি পদক্ষেপের সঠিকতা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী।
অন্যদিকে, এই বিভক্তির কারণে দলীয় শৃঙ্খলা এবং নেতৃত্বের সংকটে অনেক নেতাকর্মী ভিন্ন পথে চলে গেছেন। কিছু নেতার মতে, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির কারণে আওয়ামী লীগ জনসমর্থন হারিয়েছে এবং এই পরিস্থিতি থেকে পুনর্গঠন ছাড়া কোনো পথ নেই। তৃণমূল নেতাদের একটি বড় অংশ এখন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এদিকে, আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থানকে আরও সংকটময় করে তুলেছে দলটির উপর সাম্প্রতিক গণ-অভ্যুত্থান এবং নিহতদের পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে বিচারের দাবি।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, আওয়ামী লীগের আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা একেবারে নির্ভর করবে নেতৃত্বের পরিবর্তন এবং জনগণের সমর্থন পুনরুদ্ধারে। তাদের মতে, দলের নেতা শেখ হাসিনা এবং তার পরিবার যদি আগামীদিনে নেতৃত্ব না দেয়, তবে কিছু পরিবর্তন এবং সংশোধনের মাধ্যমে দল পুনরায় রাজনীতিতে প্রবেশ করতে সক্ষম হতে পারে।
এভাবে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কঠিন সময় আসছে, তবে দলটি যদি নিজেদের বিভক্তি দূর করতে না পারে, তবে তাদের ভবিষ্যত রাজনৈতিক জীবন আরও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।