‘আলো আসবেই’ নামে বিতর্কিত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অন্যতম সক্রিয় সদস্য হিসেবে পরিচিত অভিনেত্রী সোহানা সাবা বর্তমানে সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তার ফেসবুক প্রোফাইলে থাকা বিভিন্ন পোস্ট ও তথ্য যাচাই করে দেখা গেছে, এতে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর খবর রয়েছে।
সম্প্রতি তার শেয়ার করা একাধিক পোস্ট গুজব বলে প্রমাণিত হয়েছে। ১৪ জানুয়ারি তিনি পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি পুরোনো ছবি শেয়ার করে দাবি করেন, এটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তোলা। যদিও এটি আসলে বহু পুরোনো ছবি এবং এমন কোনো সাক্ষাৎকারের ঘটনা ঘটেনি। ফ্যাক্ট চেকিং সাইটগুলো এই তথ্যটিকে সম্পূর্ণ গুজব বলে নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া, সাবা ভারতীয় অর্থনীতিবিদ ড. অমর্ত্য সেনের একটি কথাকে বিকৃত করে পোস্ট করেছেন। তিনি দাবি করেন, "খাদ্যের অভাবে দুর্ভিক্ষ হয় না, দুর্ভিক্ষ হয় ক্রয়ক্ষমতার অভাবে," যা সম্পূর্ণ অসত্য। ড. অমর্ত্য সেন আসলে বলেছিলেন, "খাদ্যের অভাবে দুর্ভিক্ষ হয় না, ব্যবস্থাপনার অভাবে হয়।" সাবার এই বিকৃত তথ্য তার অনুসারীদের বিভ্রান্ত করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তার আরও একটি বিতর্কিত পোস্টে দেখা যায়, তিনি একটি পুরোনো বাসের ছবি দিয়ে মিথ্যা দাবি করেছেন যে এটি ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল থেকে বেঁচে ফেরা একমাত্র বাস। একই দিনে তিনি একটি ভিডিও পোস্ট করেন যেখানে ফুটপাত উচ্ছেদ অভিযানের ছবি দেখিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রশ্ন তোলেন।
‘আলো আসবেই’ গ্রুপের সক্রিয় সদস্যদের নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পর বেশিরভাগ সদস্যই আত্মগোপনে চলে গেলেও সাবা নিজের ফেসবুকে সক্রিয় থেকে নানা প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছেন। ৯ জানুয়ারি তিনি একটি ভুল তথ্য শেয়ার করেন যে পাবনার ছাত্র আন্দোলনের একজন সদস্য গুলিতে মারা গেছেন। অথচ ঐ ছাত্র জীবিত আছেন এবং এটি ফ্যাক্ট চেকিং রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে।
বর্তমানে সাবা ভারতে অবস্থান করছেন এবং জয়পুর ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের বিচারক হিসেবে মনোনীত হওয়ার খবর নিজের প্রোফাইলে শেয়ার করেছেন। তবে তার সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর ঘটনায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
গুজব ছড়ানো ও অসত্য তথ্য প্রচারের বিষয়ে তার মন্তব্য জানার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের কর্মকাণ্ড সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে, যা দায়িত্বশীলতার সম্পূর্ণ অভাব নির্দেশ করে।