‘আয়না ঘর’ পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টা : আওয়ামী লীগ আইয়ামে জাহেলিয়াত প্রতিষ্ঠা করেছিল
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার দেশের সমাজে ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’ বা অন্ধকার যুগ প্রতিষ্ঠা করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “আইয়ামে জাহেলিয়াত বলে একটা শব্দ আছে, এবং বিগত সরকার তা প্রতিষ্ঠা করেছিল। গোপন বন্দিশালাগুলো তার একটি নমুনা।”
বুধবার গোপন বন্দিশালা বা ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এখানে যা দেখলাম, তা বীভৎস এবং নৃশংস। এটি আমাদের সমাজেরই অংশ, এমনটা ভাবতে অবিশ্বাস্য লাগে। যারা নিগৃহীত হয়েছেন, তাদের মুখ থেকে শুনেছি, কী হয়েছে—কোনো ব্যাখ্যা নেই।”
অধ্যাপক ইউনূস জানান, এসব বন্দিশালায় নির্যাতিত ব্যক্তিদের বিনা কারণে, বিনা দোষে গ্রেপ্তার করা হত। একে অপরকে সন্ত্রাসী বা জঙ্গি বলে অভিযুক্ত করে এখানে ঢুকিয়ে রাখা হত। তিনি আরও বলেন, “এমন নির্যাতন কেন্দ্র সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং সংখ্যা নিরূপণ করা যায়নি।”
তিনি বলেন, এসব মানুষকে মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, এমনকি তাদেরকে খুপরির মতো ছোট স্থানে রাখা হত, যা মুরগির খাঁচার থেকেও ছোট ছিল। সমাজ যদি এই অবস্থা থেকে বের না হয়, তবে এটি টিকবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
নতুন সমাজ গড়ে তোলার জন্য অপরাধীদের বিচার ও প্রমাণ রক্ষার গুরুত্বের ওপর জোর দেন অধ্যাপক ইউনূস। গুমের শিকার ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে তিনি বলেন, “এখন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা প্রাধান্য।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। সরকার সে লক্ষ্যেই বিভিন্ন কমিশন গঠন করেছে, যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।”
প্রধান উপদেষ্টা গোপন বন্দিশালা পরিদর্শনের সময় তার সঙ্গে ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।