টঙ্গীর তুরাগতীরে লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। রোববার সকাল ৯টা ১২ মিনিটে শুরু হয়ে ৯টা ৩৫ মিনিটে শেষ হয় এই বিশেষ মোনাজাত। এ সময় মুসল্লিরা কান্নাভেজা কণ্ঠে আল্লাহর দরবারে রহমত, মাগফিরাত, হেদায়েত ও শান্তি কামনা করেন।
তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের শীর্ষ মুরব্বি ও কাকরাইল জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা জুবায়ের আহমেদ মোনাজাত পরিচালনা করেন। তার নেতৃত্বে লাখো মুসল্লি আল্লাহর রহমত প্রার্থনা করেন এবং নিজেদের জন্য, পরিবার-পরিজন, দেশ ও মুসলিম উম্মাহর জন্য কল্যাণ ও শান্তির দোয়া করেন। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার রাত থেকেই ইজতেমা ময়দানে ভিড় বাড়তে থাকে। মুসল্লিরা দলে দলে এসে ময়দান ও আশপাশের রাস্তাগুলোতে অবস্থান নেন।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করে। শনিবার রাত ১২টা থেকে ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। মোতায়েন করা হয় বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য। ফায়ার সার্ভিস ও মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয় যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে।
চলতি বছরের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়েছিল ৩০ জানুয়ারি বাদ মাগরিব আমবয়ানের মাধ্যমে। এরপর টানা তিন দিন দেশ-বিদেশের ইসলামিক চিন্তাবিদরা কোরআন ও হাদিসের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা করেন। মুসল্লিরা ধর্মীয় শিক্ষায় নিজেদের সমৃদ্ধ করেন এবং ইসলামী জীবনব্যবস্থা অনুসরণ করার প্রতিজ্ঞা করেন।
প্রথম পর্বের সমাপ্তির পর আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি বাদ মাগরিব আমবয়ানের মাধ্যমে শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। মাওলানা সাদ কান্ধালভীর অনুসারীদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে এ পর্ব, যা চলবে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
বিশ্ব ইজতেমার এই দুই পর্বের মাধ্যমে প্রতি বছরই লাখো মুসলিম আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তুরাগতীরে সমবেত হন। ইসলামের দাওয়াত ও আত্মশুদ্ধির বার্তা ছড়িয়ে দিতে এই আয়োজনের গুরুত্ব অপরিসীম। এবারও বিশ্ব ইজতেমা মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক হিসেবে ধর্মপ্রাণ মানুষদের হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলেছে।