আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ধর্ষণের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তদন্ত কাজ ১৫ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে এবং বিচার কাজ ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। তিনি রবিবার (৯ মার্চ) আইন মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে কিছু পরিবর্তন আনার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে। আমাদের উদ্দেশ্য, ধর্ষণের মামলার তদন্ত যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয়, যাতে বিচারিক প্রক্রিয়াও দ্রুততার সঙ্গে শেষ করা যায়। ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হবে এবং একইভাবে ৯০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে দেশে ধর্ষণের মামলায় ডিএনএ সনদ প্রয়োজন, তবে এটি সব জায়গায় সহজলভ্য নয়। তাই, এ বিষয়ে সংশোধনী আনার জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। “সংশোধনীতে বলা হবে, যদি কোনো নির্দিষ্ট মামলায় বিচারক মনে করেন, শুধু চিকিৎসা সনদের ভিত্তিতে তদন্ত ও বিচার সম্ভব, তাহলে সে ক্ষেত্রে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”
এছাড়া, মাগুরায় আট বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “মাগুরার সেই ঘটনার তদন্ত ও বিচারের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার দেরি বা কালক্ষেপণ হবে না। আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো বিষয়টির ওপর পূর্ণ নজরদারি রাখবে।”
উল্লেখযোগ্য যে, মাগুরার এক ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় সারাদেশে ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন সংগঠন থেকে দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবিতে নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধর্ষককে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জন্য মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সরকারও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
ড. আসিফ নজরুল আরও বলেন, “এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি। সবাইকে একযোগে এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।”
সরকার আশা করছে এই সকল পদক্ষেপের মাধ্যমে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সামাজিক অবস্থা উন্নত হবে এবং সংশ্লিষ্ট আইন বাস্তবায়ন দ্রুত হবে, যা সমাজে শান্তি এবং নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে।