আইএমএফ নয়, ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর কারণেই ভ্যাট বৃদ্ধি : প্রেস উইং
সরকার সম্প্রতি কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। রবিবার (১২ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
শফিকুল আলম বলেন, “দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য এবং অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। এর অংশ হিসেবে কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটি দেশের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “সত্যিকার অর্থে আমরা এমন একটি অবস্থায় যেতে চাই যেখানে দেশের রাজস্ব ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে। রাজস্ব আদায় কমে গেলে আমাদের ঋণের ওপর নির্ভরতা বাড়বে, যা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। তাই কিছু পণ্যে ভ্যাট বাড়ানোর মাধ্যমে আমরা সেই ঘাটতি পূরণে কাজ করছি।”
প্রেস সচিব জানান, গত ৫ মাসে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। এই ঘাটতি পূরণ করতে হলে রাজস্ব বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই। তিনি বলেন, “যারা মনে করছেন, এটি আইএমএফের চাপে করা হয়েছে, তারা বিষয়টি ভুল বুঝছেন। আমাদের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং টাকার মান রক্ষা করতে ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর প্রয়োজন। এটি কোনো বাইরের চাপ নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থে নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত।”
আইএমএফের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, “আইএমএফ আমাদের ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান। তবে তারা মূলত আমাদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকে। তাদের ঋণ পাওয়া মানে শুধু অর্থ নয়, এটি দেশের বিনিয়োগ পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই আইএমএফের সঙ্গে কাজ করাটা দেশের জন্য উপকারী। তবে ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কোনো বাইরের চাপে আসেনি।”
তিনি আরও জানান, “যে কোনো আর্থিক সিদ্ধান্তে মানুষের ওপর কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে, তবে এটি সাময়িক। আমরা দীর্ঘমেয়াদে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কাজ করছি।”
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে সরকার একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবেই কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।