অ্যান্টার্কটিকার অ্যামরফাস ও বোল্ডার ক্লে হিমশৈলের মধ্যে অবস্থিত এনিগমা হ্রদটি দীর্ঘদিন ধরে বরফে আবৃত এবং পূর্ণ হিমায়িত বলে বিবেচিত হয়ে আসছিল। তবে ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এক অভিযানে বিজ্ঞানীরা রাডার জরিপের মাধ্যমে বরফের প্রায় ৪০ ফুট নিচে পানির অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই হ্রদে বিভিন্ন ধরনের অণুজীব বা জীবাণু রয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে, এসব জীবাণু বায়ুমণ্ডল থেকে বিচ্ছিন্ন থেকেও টিকে আছে। এদের মধ্যে কিছু সালোকসংশ্লেষী জীবাণু, যা হ্রদে অক্সিজেন সরবরাহ করে।
গবেষণায় বিশেষভাবে প্যাটেসিব্যাক্টেরিয়া নামে পরিচিত জীবাণুর প্রজাতিগুলোর সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব জীবাণু পরিবেশের কঠিন পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য নিজেদের কৌশল বদলে ফেলে এবং নতুন ধরনের বাস্তুতন্ত্র তৈরি করে।
গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী স্টেফানো উরবিনি জানান, এই এককোষী জীবাণুগুলো বড় কোষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বেঁচে থাকে। এমন ধরনের জীবাণু বরফাচ্ছাদিত হ্রদে আগে কখনো পাওয়া যায়নি এবং সাধারণত উচ্চ অক্সিজেনযুক্ত পরিবেশেও এদের উপস্থিতি দেখা যায় না।
এনিগমা হ্রদের পানির উৎস এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিজ্ঞানীদের মতে, অ্যান্টার্কটিকার এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম, তীব্র বাতাস এবং সৌর বাষ্পীভবন হয়, যা পানির অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, কোনো অজানা ভূগর্ভস্থ পথের মাধ্যমে পানি এখানে জমা হতে পারে।
এই গবেষণার ফলাফল কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। অ্যান্টার্কটিকার এই হ্রদ এবং এর পরিবেশ নিয়ে গবেষণা জীববিজ্ঞান ও ভূবিজ্ঞান উভয় ক্ষেত্রেই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আনতে পারে।
সূত্র: লাইভ সায়েন্স