সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সচল রাখতে অস্থায়ী দপ্তর স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ; ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়; যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়—এই পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা সংস্থাগুলোর কার্যালয়ে অস্থায়ীভাবে দাপ্তরিক কাজ পরিচালিত হবে। আগামীকাল রোববার থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেখানে বসবেন।
গত বুধবার গভীর রাতে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে ভবনটির ছয় থেকে নবম তলায় অবস্থিত পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র, কম্পিউটার ও আসবাব পুড়ে যায়। মন্ত্রণালয়গুলো যথাযথভাবে সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে অস্থায়ীভাবে কাজ চলবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিবরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও উৎস অনুসন্ধানে ৮ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি দুর্ঘটনা না নাশকতা ছিল তা অনুসন্ধান করবে। গতকাল শুক্রবার এই কমিটির প্রথম বৈঠক হয়েছে, যেখানে সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আগুন লাগার ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সদস্য বলছেন, প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে আগুন লাগা স্বাভাবিক নয় এবং এটি একটি নাশকতার ফলেও হতে পারে। এই বিষয়ে সঠিক তথ্য পেতে তদন্ত কমিটি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
বৈঠক শেষে তদন্ত কমিটির সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয়গুলো ঘুরে দেখেন। ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, সচিবালয়ে একাধিক স্থানে একযোগে আগুন লাগার ঘটনা অস্বাভাবিক। তিনি মনে করছেন, এই আগুনে তাপমাত্রা ও বিস্ফোরণের মতো কিছু অস্বাভাবিকতা রয়েছে, যা নির্দিষ্ট রাসায়নিক বা বিস্ফোরক ছাড়া সম্ভব নয়।
তদন্ত কমিটিকে আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন এবং পরবর্তী দশ কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে সচিবালয়ের প্রবেশপথে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) কড়া পাহারা দেখা গেছে। আগামীতে সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আরো পরিবর্তন আনা হবে বলে জানানো হয়েছে।