দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল সামরিক আইন ঘোষণার পর অভিশংসন এড়াতে সক্ষম হয়েছেন। তবে এই সিদ্ধান্ত দেশের পার্লামেন্টের বাইরে ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। শাসকদলের আইন প্রণেতারা অভিশংসন প্রস্তাবের ভোট থেকে বিরত থাকায় এটি পাস হয়নি।
মঙ্গলবার রাতে ইওল পার্লামেন্টে সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়ে বেসামরিক শাসন স্থগিত করেন। তবে আইন প্রণেতাদের চাপে তিনি এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ান। বিরোধী দলগুলো তার বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রস্তাব আনলেও শাসকদল পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) সদস্যদের বয়কটের কারণে প্রস্তাবটি ব্যর্থ হয়।
ভোটের পর পার্লামেন্টের স্পিকার উউ ওন-শিক বলেন, প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য উপস্থিত না থাকায় ভোটটি বৈধ হয়নি। স্পিকার এ ঘটনাকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শাসকদলের ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে পিপিপি দাবি করে, অভিশংসন রোধের মাধ্যমে তারা জাতীয় বিভাজন ও বিশৃঙ্খলা এড়িয়েছে। তবে পার্লামেন্টের বাইরে বিপুলসংখ্যক বিক্ষোভকারী এই ফলাফলে হতাশা প্রকাশ করেছেন। কিছু মানুষ হতাশায় শ্বাসকষ্টে ভুগেছে এবং কাঁদতে দেখা গেছে।
বিরোধী দলগুলো ইওলকে পুনরায় অভিশংসনের অঙ্গীকার করেছে। বিরোধী নেতা লি জে-মিয়ং বলেছেন, তারা যেকোনো মূল্যে প্রেসিডেন্ট ইওলকে ক্ষমতাচ্যুত করবেন।
এই পরিস্থিতিতে ইওল তার শাসনামলে সৃষ্ট উত্তেজনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেও দলের ওপর তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। তবে তার এই সিদ্ধান্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতা দীর্ঘস্থায়ী করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অধ্যাপক ভ্লাদিমির তিখোনভ বলেন, অভিশংসন প্রস্তাব ব্যর্থ হওয়া রাজনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি করবে। প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে, যা তার অবস্থানকে আরও কঠিন করে তুলবে।
ইওলের সামরিক আইন জারির ঘটনাটি শুধু দেশের মধ্যে নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েও সমালোচনা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে মিত্ররা তার এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আগাম কোনো তথ্য জানতেন না।